বুদাপেস্ট চুক্তি – Budapest Treaty

বুদাপেস্ট চুক্তি (Budapest Treaty )

অণুজীবসমূহের পেটেন্ট অধিকার দাবি করে জমা দেওয়া আবেদনপত্রের সঙ্গে অণুজীবের যে নমুনাটি জমা দিতে হয় সেটি পরীক্ষা করে দেখা ও তা সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক মানের সংগ্রহশালা গড়ে তোলার লক্ষ্যে হাঙ্গেরির বুদাপেস্ট শহরে ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দের ২৮ এপ্রিল স্বাক্ষরিত এক চুক্তি (দ্য বুদাপেস্ট ট্রিটি অন দি ইন্টারন্যাশনাল রেকগনিশন অভ দ্য ডিপোজিট অভ মাইক্রোঅর্গানিজমস ফর দ্য পারপাসে স অভ পেটেন্ট প্রসিডিওর)।

এই চুক্তিটি কার্যকর হয় ৯ আগস্ট ১৯৮০ থেকে। চুক্তিটি দেখাশোনার ভার দেওয়া হয় বিশ্ব মেধাসম্পদ সংগঠনের হাতে। এই চুক্তির শরিক হবার অধিকারী তারাই যারা প্যারিস কনভেনশনের স্বাক্ষরকারী। ২০০৬ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট পর্যন্ত যে ৬৫টি দেশ এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে ভারত তাদের একজন

পেটেন্ট আইনের সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী কোনো বস্তুর জন্য পেটেন্ট চেয়ে আবেদন করতে হলে আবেদনপত্রে সেই বস্তুটি এবং তার উৎপাদন প্রক্রিয়া সম্বন্ধে অণুপুঙ্খ বর্ণনা দিতে হবে। বর্ণনা এতটাই অণুপুঙ্খ হতে হবে যাতে সেই বর্ণনা থেকে বস্তুটি তৈরি করে ফেলতে পারে বিষয়টিতে দক্ষ কোনো ব্যক্তি। কিন্তু অণুজীবের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র বর্ণনা থেকে এ কাজ করা সম্ভব নয় বলে প্রয়োজন হয়ে পড়ে অণুজীবের একটি নমুনাও জমা দেওয়া। আবার আবিষ্কারক যতগুলি দেশে অণুজীবটির পেটেন্ট চাইবেন ততগুলি দেশেই একটি করে নমুনা জমা দেওয়াও তো সহজ কাজ নয় বা দিলেও তা সংরক্ষণ করে রাখা ততোধিক ঝামেলার কাজ। এইসব কারণে বুদাপেস্ট চুক্তি অনুযায়ী ঠিক হয় সারা পৃথিবী জুড়ে গড়ে তোলা হবে কিছু আন্তর্জাতিক আমানত কর্তৃপক্ষ (ইন্টারন্যাশনাল ডিপোজিটরি অথরিটি) যারা নমুনা সংগ্রহ, পরীক্ষা ও সংরক্ষণের কাজটি করবে। কোনো অণুজীবের আবিষ্কারক যদি তার আবিষ্কারের জন্য পেটেন্ট অধিকার চান তবে তাকে আগে এমন কোনো আমানত কর্তৃপক্ষের কাছে তার নমুনাটি জমা দিতে হবে। বিনিময়ে তিনি পাবেন একটি অ্যাকসেসন নাম্বার। অতঃপর যে দেশেই তিনি পেটেন্টের জন্য আবেদন করুন না কেন, আবেদনপত্রে কেবল ওই নাম্বারটির উল্লেখ তাকে করতে হবে, কোনো নমুনা জমা দিতে হবে না। বর্তমানে ২০টি দেশে এরকম প্রায় ৩০টি আন্তর্জাতিক আমানত কর্তৃপক্ষ গড়ে উঠেছে। ভারতে চণ্ডীগড়ের IMTECH সংস্থাটি বর্তমানে আন্তর্জাতিক আমানত কর্তৃপক্ষের স্বীকৃতি লাভ করেছে ।

Scroll to Top