উপভোক্তা সুরক্ষা আইন ১৯৮৬ (Consumer Protection Act-1986)
ভারতীয় উপভোক্তাদের স্বার্থ সুরক্ষার জন্য ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দের ২৪ ডিসেম্বর ভারতীয় সংসদ এই আইনটি পাস করে। ১৯৯৩, ১৯৯৮ ও ২০০২ খ্রিস্টাব্দে তিন দফা সংশোধনের পর ২০০৩ খ্রিস্টাব্দের ১৫ মার্চ থেকে আইনটি লাগু হয়। এই আইনটি কিন্তু মূলত ক্ষতিপূরণমূলক, শাস্তিমূলক নয়। অর্থাৎ কোনো পণ্য বা পরিষেবা কিনে ক্রেতা যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে তার জন্য বিক্রেতাকে ক্রেতার হাতে ক্ষতিপূরণ তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারে এই আইন, তাকে শাস্তি দিতে পারে না। উপভোক্তা সুরক্ষা আইনটি ক্রেতার ছ-রকমের অধিকারকে সুরক্ষা দেওয়ার কথা বলছে। এগুলি হল:
- ১. নিরাপত্তার অধিকার;
- ২. তথ্য পাওয়ার অধিকার;
- ৩. বাছাইয়ের অধিকার;
- ৪. উপভোক্তা সম্পর্কিত শিক্ষার অধিকার;
- ৫. প্রতিকার চাওয়ার অধিকার;
- ৬. শুনানির অধিকার।
এই আইন অনুযায়ী কোনো পণ্য বিক্রির সময় পণ্যটি সম্বন্ধে কিছু তথ্য বিক্রেতা অবশ্যই লিখিতভাবে ক্রেতাকে জানিয়ে দেবে। যেমন পণ্যটির পরিমাণ কত, সর্বাধিক খুচরো দাম কত, পণ্যটি কতদিন পর্যন্ত ব্যবহারযোগ্য থাকবে ইত্যাদি। এ ছাড়া কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ড (বি.এস.আই) থেকে পণ্যটির মান যাচাই করে নেওয়া এবং তা প্যাকেটের গায়ে মুদ্রিত করে দেওয়া বাধ্যতামূলক।
কোনো পণ্য কেনার পর প্যাকেটের গায়ে মুদ্রিত এইসব তথ্যের সঙ্গে ক্রেতা যদি বাস্তব তথ্যের অমিল দেখে তাহলে সে উপভোক্তা সুরক্ষা আইন অনুযায়ী বিক্রেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারে। মামলা করাটাও এই আইন অনুযায়ী খুবই সোজা। স্রেফ সাদা কাগজে দরখাস্ত করে নালিশ জানাতে হয়। সঙ্গে লাগে যৎসামান্য কোর্ট ফি। আর যখন বিচার হবে তখন নিজের বক্তব্য নিজে বলতে পারলে এবং বিপক্ষের যুক্তি খণ্ডন করে নিজের বক্তব্য বিচারকের সামনে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলে উকিল নিয়োগ করার প্রয়োজনও থাকে না। বস্তুত এই আইনের বিশেষত্বই এটি। সহজ-সরল নিয়ম, ন্যূনতম ব্যয় এবং মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি ।